ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা, বিশেষ করে কলকাতার বাসিন্দাদের মধ্যে বাংলাদেশের ইলিশের প্রতি প্রেম পুরোনো। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে কলকাতায় ইলিশ রপ্তানি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ কম যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা এবার ঝুঁকেছেন মিয়ানমারের ইলিশের প্রতি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমার থেকে কলকাতায় যাওয়া তাজা ইলিশ বাজারে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শীতের শুরুতে এমন ঘটনা বিরল হলেও কলকাতার ইলিশপ্রেমীরা বেশ খুশি। সাধারণত, তাজা ইলিশের দেখা মেলে জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত। তবে নভেম্বর মাসে এমন তাজা ইলিশ বাজারে পাওয়া একেবারেই ব্যতিক্রম। যদিও ফ্রোজেন ইলিশ সারা বছরই বাজারে মেলে।
কলকাতার মাছ আমদানিকারক সমিতির সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে প্রতি সপ্তাহে চার-পাঁচ টন ইলিশ আসছে।’ বিমানবন্দর কার্গো কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আনোয়ার আরও বলেন, ‘এই ইলিশ উড়োজাহাজে আনা হচ্ছে। তাই এগুলো একেবারে টাটকা। সমুদ্রপথে আনা ফ্রোজেন ইলিশের মতো নয়।’
সম্প্রতি কলকাতার কিছু ইলিশপ্রেমী মিয়ানমারের ইলিশ খেয়ে জানিয়েছেন, এটির স্বাদ বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের চেয়ে ভালো। দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা ইলিশের তুলনায় এই ইলিশ বেশি সুস্বাদু বলে মনে করছেন অনেকে। বিষয়টি বেশ আশ্চর্যের। কারণ এত দিন মিয়ানমারের ইরাবতী নদীর ইলিশকে স্বাদে গঙ্গা, পদ্মা কিংবা মেঘনার ইলিশের চেয়ে নিম্নমানের ভাবা হতো।
বিশ্বের মোট ইলিশের ৬০ শতাংশের জোগান আসে বাংলাদেশ থেকে। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে মিয়ানমার। দেশটি বৈশ্বিক চাহিদার ১৫-২০ শতাংশ সরবরাহ করে। এবার মিয়ানমারের ইলিশের দাম বাংলাদেশের ইলিশের তুলনায় কম হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে কলকাতার বাজারে মিয়ানমার থেকে আসা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ৩০০ রুপি থেকে ১ হাজার ৪০০ রুপিতে। এসব ইলিশের ওজন ১ কেজি থেকে ১ দশমিক ২ কেজির মধ্যে। ১ দশমিক ৩ থেকে দেড় কেজি ওজনের বড় ইলিশের দাম প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ রুপি।
No comments:
Post a Comment