সুমন কুমার সাহা,সারিয়াকান্দি বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা শীতে কাবু হয়ে পরেছে। অনেকেই ছেরে দিয়েছে স্কুলে আসা। এতে লেখাপড়া বিঘ্নিত হলেও বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকছেনা ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের। ধনতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ অবস্থা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের শীতে কাবু হয়ে পরেছে এ এলাকার জনপদের বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। বিশেষ করে বাঁধ ও চর এলাকার মানুষেরা শীতে একেবারে কাহিল হয়ে পরেছেন। এর মধ্যে আবার সারাদিনেও সূর্যের দেখা না মেলায় লোকজন একেবারে যবুথুবু হয়ে পরেছেন। শীত নিবারনের জন্য স্থানীয় ভাবে অনেক রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে এ অঞ্চলের শিশু - কিশোররা ত্রাহী অবস্থায় পরেছে।
মঙ্গলবার সোয়া একটায় গিয়ে দেখা গেলো, সদর ইউনিয়নের ধনতলা গ্রামে। এই গ্রামের ধনতলা সরকারি পাথমিক স্কুলে আসা ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছেন জবু থুথু অবস্থায়। ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের পাঠ দানের ব্যস্ততা।
বেঞ্চে বসা ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা শীতে লিখতে পারছেনা। মুখে কথা বললেও, এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে শব্দ উচ্চারণ। প্রচণ্ড শীতে কাঁপছেন শিক্ষার্থীরা। স্কুলের দরজা- জানালা বন্ধ করে দেয়া হলেও, পায়ে জুতা - সেন্ডেলের অভাবে দু পা কাঁপছে ঠর ঠর করে । স্কুলের শিক্ষকেরা পাঠ দান অব্যাহত রাখলেও, শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড শীতে কাহিল হয়ে পরার অবস্থা দেখা গেলো । তবে শিক্ষকদের করার কিছুই নেই।
শিক্ষকরা বললেন, পায়ে জুতা সেন্ডেল না থাকায়, পাকা মেঝের ঠাণ্ডাতে তাদের শরীর আরো নাজেহাল হয়ে পরেছে।
এতে আমাদের কি করার আছে বলেন। তারা আরো বলেন, শীতের জন্য আলাদা কোনো নির্দেশনা না থাকায় পাঠদানে আমরা কোনো হেরফের করতে পারছিনা।
স্থানীয় সমেস আলী বলেন, আমাদের ধনতলা গ্রামটি ছিলো যমুনা বাঁধের প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্বে।
যমুনা নদীর ভাঙ্গনে সেখান থেকে সরে এসেছে দিগলকান্দী গ্রামের সামনে। এখানকার বাঁধের ধারে জনবসতি গড়ে তুলেছি আমরা। গ্রামের লোকেরা ছিন্নমূল, ভূমিহীন হয়ে পরায় জেগে ওঠা চরে চাষবাস, কেউবা ক্ষুদ্র ব্যবসা আবার, কেউবা শ্রমিক হয়ে জীবন যাপন করে থাকেন।
বড়রা বিভিন্ন রকমের শ্রীহীন গরম কাপড়ে শীত নিবারন করলেও, শিশুদের দিকে নজর নেই তেমন। যার জন্য ক্ষুদে শিক্ষারর্থীরা গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট করেন। আর শীত থাকে কয়েক দিন মাত্র। তার জন্য টাকা খরচ করে শীতের গরম কাপড় কিনে দিয়ে কি হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক
সোহরাব হোসেন বলেন, প্রচণ্ড শীতে স্কুলে শিক্ষারর্থীদের উপস্থিতি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে গেছে। এ গ্রামের মানুষেরা গরিব, ছিন্নমূলের মতো বসবাস করেন।
তারা গরু ছাগল হাঁস- মুরগি পালনে টাকা খরচ লাভ জনক মনে করেন। কিন্তু শিশুদের প্রতি যত্নশীল কম।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুর রহমান বলেন, জানা ছিল না, গরম কাপড়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষুদে শিক্ষারর্থীদের জন্য যথা সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহন করবো আশা করি।
No comments:
Post a Comment